এশিয়ার বৃহতম গ্রাম হবিগঞ্জের বানিয়াচঙ্গের নির্ভৃত অঞ্চলে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে উঠা লক্ষীবাউর জলাবন বা সোয়াম্প ফরেষ্ট। স্থানীয়ভাবে ‘খরতীর জঙ্গল’ নামে পরিচিত। যুগ যুগ ধরে এই বনটি স্থানীয়রা দেখে আসলেও এই বনটি যে প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য আকর্ষনীয় ও মনোমুগ্ধকর পর্যটন স্থানে পরিণত হতে পারে, তা অনেকেরই অজানা।
হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচঙ্গ উপজেলা সদরের আদর্শ বাজার থেকে প্রায় ৫ কিলোমটার উত্তরে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর প্রায় ১ হাজার একর জুড়ে লক্ষীবাউর জলাবন। এর উত্তরে খরতী নদী, পশ্চিমে নলাই নদী, দক্ষিনে লোহাছুড়া নদী পূর্বে রয়েছে গঙ্গাজল হাওড়। সাড়ে তিন কিলোমিটার জুড়ে জঙ্গল বেষ্টিত এই জলাবনটি বর্ষার সময় ৪ /৫ ফুট স্বচ্ছ পানিতে নিমজ্জিত থাকে। বর্ষায় নৌকায় ও হেমন্তে পায়ে হেটে কিংবা হালকা যানবাহনে যাওয়া যায়।
স্থানীয় প্রবীণরা জানান, প্রাকৃতিকভাবে এই জলাবনটির অভ্যন্তরে রয়েছে ৪/৫টি দীর্ঘ খাল, ছোটবড় কয়েকটি জলাশয়। বনটিকে ঘিরে আছে হিজল করচ, বরুন, কাকুরা, খাগড়া, বউলা, নল, ছাইলাসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ ও গুল্ম। মেছোবাঘ, শিয়াল, বিষাক্ত সাপ, ব্যঙ, বিভিন্ন জাতের বক, বালিহাস, পানকৌড়ি‘র বসবাস। শীতে ভিন দেশী পাখির কোলাহলে নির্জন বনটির পরিবেশ মুখরিত হয়ে উঠে।
এনামুল হোসেন খান বাহার , মোতাওয়াল্লী আবু ইউছুফ খান ওয়াকফ ষ্টেইট লক্ষীবাউর বানিয়াচঙ্গ, হবিগঞ্জ , স্থানীয় মুরব্বী এস এম আলী আক্তার জানান, স্থানীয় পঞ্চায়েত এই বনটিকে অতিথি পাখির অভয়ারণ্য হিসেব ঘোষনা করেছেন। কেউ পাখি শিকার করলে তাকে ৫হাজার টাকা জরিমানাসহ শিকারীকে পুলিশে সোপর্দ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আবু ইউছুফ খান ওয়াকফ ষ্টেইটের অধীন এই জলাবনটি দীর্ঘ দিন যাবত ৭টি মহল্লার বাসিন্দারা ব্যবহার করে আসছেন । বনের গাছের ডালপালা বিক্রি এবং জলাশয় ইজারা দিয়ে যে আয় হয় তা এলাকার ধর্মীয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠনের এবং জনহিতকর কাজে ব্যয় করা হয় । এজন্য রয়েছে ৯ সদস্য বিশিষ্ট পরিচালনা কমিটি।